সিরাজদিখানে দোকানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ
সালাহউদ্দিন সালমান:
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে দোকানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের ভূইরা গ্রামের নুর হোসেনের মোল্লা দোকানে দুর্বৃত্তরা এ অগ্নিসংযোগ করে। উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের ছোটপাউলদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মামলা-পাল্টা মামলায় পুরুষ শূন্য বাড়ীর রাস্তার পাশে দোকানে আগুন জ্বললেও নিভাতে আসেনি কেউ। এসময় অল্পের জন্য রক্ষা পায় দোকানের পাশের দুটি চৌচালা টিনের ঘর।
জানা যায়, মোহাম্মদ আলী ও শফিউদ্দন মোল্লা (শফী) গত ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ইউপি নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় বিজয়ী ইউপি সদস্য শামসুল ইসলাম মন্ডলের সাথে দ্বন্দ্ব চলছে। এরই জেরে এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে কে বা কারা এই অগ্নিসংযোগ ঘটনা ঘটিছে এলাকাবাসী বলতে পারেনি। অনেকেই বলছে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটাতে পারে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী নুর হোসেনের স্ত্রী নার্গিস বেগম জানান, ঈদের আগে নির্বাচন নিয়ে আমাদের এলাকার শামসুল মেম্বারের লোকজনের সাথে আমাদের ঝগড়া হয়। তাতে দুই পক্ষই মামলা করে। সে মামলায় জামিন না পাওয়ায় আমার স্বামী,ছেলেসহ বাড়ির লোকজন এলাকা ছাড়া। তখন থেকে আমাদের দোকানটাও বন্ধ রয়েছে। আমি প্রতিদিন সকালে ফজরের নামাজ পড়ে দোকান দেখে ঝেড়েমুছে রেখে যাই। আজ সকালেও নামাজ পড়ে সাড়ে পাঁচটার দিকে দোকানের দিকে আসি। এসে দেখি দোকান পুড়ে যাচ্ছে। আমাকে দেখে দোকানের সামনে থেকে দৌড়ে পালিয়েছে করিম মুন্সীর ছেলে সেলিম(৩৫), নুরু খন্দকারের ছেলে আবুল খন্দকার( ৫০), কামাল হোসেনের ছেলে সালাউদ্দিন (২০), জজ মিয়ার ছেলে জাকির ( ৪৫) ও আউয়াল (৪০)সহ কয়েকজন। তারা সকলেই গতকাল ওই মামলার জামিনে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে গেছে। আর বলছে আমরা এলাকায় এসে পড়ছি, এখন খেলা হবে। তাই আমার সন্দেহ ওরাই আমার দোকান লুটপাট করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। দোকানে একটা নতুন ফ্রিজসহ প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মালামাল ছিল। এর আগে ওরা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করে টেঁটাবিদ্ধ করে, আমি এই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই। মানুষ কতটুকু নির্লজ্জ হলে পুরুষ শূন্য একটি বাড়ির সামনে এসে ঢুল বাজায়, গান গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে।
অভিযুক্ত বিজয়ী ইউপি সদস্য শামসুল ইসলাম মন্ডল জানান, আমি এলাকার বাহিরে আছি। আমি মোবাইলে শুনেছি আগুনের খবর টি। তবে কে আগুন লাগিয়েছে আমি জানিনা। আমাদের বাড়ির ছেলেরা বাড়িতে ছিল না এবং আমাদের কাছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আছে সেগুলো আমরা পুলিশে দিয়েছি। কে আগুন লাগিয়েছে তারা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমরা এই আগুন লাগাই নাই। আমাদের ফাঁসানোর জন্য এই অগ্নিকা-ের ঘটনার সাজিয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এব্যাপারে সিরাজদিখান থানার ওসি একে এম মিজানুল হক বলেন, খবর পেয়ে সকালে সেখানে অফিসার পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগী নুর হোসেনের স্ত্রী নার্গিস বেগম থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। তদন্ত শেষে সত্যতা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply