ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পুলিশ সেজে
ডাকাতির একাধিক ঘটনায় অভিযুক্ত ডাকাত সর্দার আটক
সালাহউদ্দিন সালমান।
পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয়ে ছদ্মবেশে ডাকাতি করতেন ডাকাত সর্দার জসিম মোল্ল্যা। ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের গুরুতর জখম করতেন তিনি।
আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার জসিম ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মুন্সীগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।ডাকাত সর্দার জসিমের দুই সহযোগী হলেন—জাহিদুল কাজি ও মো. ইয়াসিন
আটকের সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশের পোশাক স্বর্ণের চেইন, ল্যাপটপ, পুলিশের এসআই র্যাংক ব্যাজ,ওয়াকিটকি,খেলনা পিস্তল, চাপাতি,নারী ছদ্মবেশ ধারণের পরচুলা, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা সহ অনেক সরাঞ্জম জব্দ করা হয়।বুধবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে কেরানীগঞ্জে র্যাব-১০-এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০-এর অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. ফরিদ উদ্দিন।তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে র্যাব-১০- ঢাকা মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় একটি অভিযান চালায়। অভিযানে পুলিশ ছদ্মবেশে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার ও তার প্রধান দুই সহযোগীকে আটক করা হয়।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, আসামিরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বেশ কিছুদিন যাবত ঢাকা, নরসিংদী, শরিয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের ছদ্মবেশে এবং ডাকাতির অভিপ্রায়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করতো। তারা বড় ব্যবসায়ীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা নিতো এবং ডাকাতির কাজে কেউ বাধা দিলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের হত্যা ও গুরুতর জখম করতো।
ডাকাত সর্দার জসিমের বিষয়ে এডিশনাল ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন বলেন, আসামি জসিম মোল্ল্যা আন্তঃজেলা দুর্ধষ ডাকাত দলের সর্দার। তার নেতৃত্বাধীন ডাকাত দল শরিয়তপুরের জাজিরাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় একটি ত্রাশের রাজত্ব কায়েম করেছিল। জসিম শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকায় চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর চাঞ্চল্যকর রিপন হত্যা মামলার প্রধান আসামি। পুলিশের পোশাক পরিধান করে এসআই পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিতো ডাকাত সর্দার জসিম। জাজিরা এলাকায় সে ছিলা এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। জসিম মোল্ল্যার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, প্রতারণা, মারামারি ও হত্যাচেষ্টাসহ মোট ১৩টি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় জসিম সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
জাহিদুল ও ইয়াসিন ডাকাত সর্দার জসিম মোল্ল্যার প্রধান সহযোগী। তারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সম্পদশালী ও প্রবাসীদের বাড়ির ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ডাকাত সর্দার জসিমকে দিতো। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জসিম মোল্ল্যা তার দলসহ ডাকাতি করতো। আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply