বৃহস্পতিবার , ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আরো
  7. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  8. কলাম
  9. কৃষি
  10. খুলনা বিভাগ
  11. খেলাধুলা
  12. গণমাধ্যম
  13. চট্টগ্রাম বিভাগ
  14. জাতীয়
  15. ঢাকা বিভাগ

বিক্ষিপ্ত ভাবনা।। শামস্উদ্দিন আহাম্মদ

প্রতিবেদক
সভ্যতার আলো ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪ ৭:১১ অপরাহ্ণ

 ইংল্যান্ডের প্রখ্যাত কবি Alexander Pope এর Happy The Man  কবিতাটি মনে হয় অনেকেই পড়েছেন। এক সময় এটা নবম  ও দশম শ্রেণিতে পাঠ্য ছিল। সে কারণে কবিতাটি আমি বার বার পড়েছি। অত্যন্ত সুখপাঠ্য, এ কবিতাটি যতবারই পড়েছি ততরারই ভাল লেগেছে। কবির চিত্রায়িত সুখি মানুষটিকে আমার কাছে সত্যিই সুখি বলে মনে হয়নি। মানুষটির সকল চিন্তা ভাবনা, স্বপ্ন দেখা সবই পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত একখন্ড জমিকে কেন্দ্র করে, সে সৎ, অন্যের ক্ষতি কখনো কামনা করে না।এ সব দিক দিয়ে অনেক ভাল হলেও সে সংকীর্ণমনা, চরম স্বার্থপর। কারও বিপদে সাহায্য করতে এগিয়ে যায় না। তার নিজের বিপদে কেউ এগিয়ে আসুক সেটাও সে কামনা করে না। কিন্তু আমার শ্যামল কোমল বাংলার প্রিয় কবি কামিনি রায়, তাঁরে কি ভুলা যায় !

পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি

এ জীবন মন সকলি দাও

তার মতো সুখ কোথাও কি আছে

আপনার কথা ভুলিয়া যাও।

পরের কারণে মরনেও সুখ,

 

জীবনের আদর্শতো এমনই হবে। দেশ কালের প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে বিশ্ব মানবে পরিণত হতে হবে।

আশরাফ, আতরাফ কালো কিংবা ধলো সব কিছু ভুলে আমরা হবো প্রত্যেকের তরে প্রত্যেকে। তাইতো দেখি যুগে যুগে বিশ্বপ্রান্তরে তীতুমীর, ক্ষুদিরাম, রফিক,সফিক, আসাদ,নূরহোসেন ,আর কত নাম না জানা বরেণ্যরা নিজের সবচেয়ে প্রিয়বস্তু জীবনটা অন্যের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন।এর চেয়ে ভাল কাজ মহৎ কাজ আর কী হতে পারে।

কিন্তু ইদানিং মনে হয়, না কামিনি রায় নয়, Alexander Pope ই ঠিক আছেন। জীবন বিলিয়ে দেয়া খুব সহজ, জীবন সংহার করাও খুব সহজ কিন্তু জীবনের মূল্য পরিশোধ করা সে বড় কঠিন।  যে চেতনাকে বুকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধ হল। লক্ষ লক্ষ মা বোন জীবন দিল,ইজ্জত দিল,জীবনের তরে পঙ্গুত্ব বরণ করলো তাঁদের আত্মত্যাগকে ভুলতে সেই চেতনাকে ভুলতে, আমাদের কতটুকু সময় লেগেছিল। এরশাদ হটাও আন্দোলন, খালেদা হটাও আন্দোলন, সর্বশেষ শেখ হাসিনা হটাও আন্দোলন। প্রতিটা আন্দোলনে আমাদের জানমালের কী বিশাল ক্ষতি হয়েছে। প্রতিবারই দেশটা কত পিছিয়েছে । অথচ এর জন্য দায়ী কে ? নি:সন্দেহে আমাদের  আশা জাগানিয়া, সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখানিয়া নেতৃবৃন্দ।যাদের নাম ইতোমধ্যেই উল্লিখিত হল তাদের অবৈধ ভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার লোভ, আমাদের রক্তকে যারা সব সময়েই ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এরশাদ যাকে এক সময়ে জানলাম স্বৈরাচার, তিনিই জেল থেকে বের হয়ে এসে হয়ে গেলেন ফুলের মতো পবিত্র। অত্যন্ত সম্মানের সাথে আবার রাজনীতিতে হলেন পূনর্বাসিত।আজ খালেদা জিয়ার গায়েও নেই কোন কলঙ্কের দাগ। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও এমনটি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। সময়ের ব্যবধানে, সরকারের পালাবদলের সাথে সাথে চিহ্নিত, দন্ডিত দাগী আসামী ফুলের মতো পবিত্র হয়ে  জেল থেকে বের হয়ে আসেন।  ফুলের মালা পড়ে ,শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত, উৎসবমুখর পরিবেশে জেল গেট থেকে বীরদর্পে বেড়িয়ে আসেন এক সময়ের লুটেরা, জনধিকৃত রাজনীতিবীদরা। শুধু ফিরে আসেন না সময়ের সাহসী সন্তান আমাদের বীর শহিদরা। ফিরে আসে না ডা: মিলন, নূরহোসেন, আবু সাঈদরা।এক সময় পথ পানে চেয়ে চেয়ে, শহিদ জননী , শহিদ জায়ার চোখ অন্ধ হয়ে যায়, অশ্রু শুকিয়ে যায়,বিশেষ মুহুর্তে ভিডিও ধারন করার স্বার্থে তথাকথিত জননেতার আগমনও বন্ধ হয়ে যায়। চিরতরে হারিয়ে যায় শহিদের স্বপ্ন। নতুন রূপে, নতুন শ্লোগান নিয়ে আগমন ঘটে নতুন স্বৈরশাসকের ।

উপসংহারে তাই বলাই যায় কামিনি রায়, তুমি তোমার কবিতায় আমাদের ভুল শিখিয়েছ, Alexander Pope এর নির্দেশনাই সঠিক । আর হয়তো এ কারণেই কবি রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন  এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মিলে না

শুধু সুখ চলে যায়।এমনি মায়ার ছলনা———।

 

 

 

সর্বশেষ - মুন্সীগঞ্জ