স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান সিনহাকে ছয় বছর পর নিজ এলাকায় বরণে মানুষের ঢল নামে। বুধবার বিকেলে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুল এবং ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। পথে পথে রাস্তার দুইপাশ থেকেও সাধারণ মানুষ হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানায়।
তিনিও ছাদখোলা গাড়ি থেকে হাত নেড়ে প্রতিউত্তর দেন। এ সময় বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা- কর্মীদোর মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পরে। আর এমন স্মরণীয় বরণে অভিভূত জনাব সিনহা ঘোষণা করেন- ‘দল মনোনয়ন দিলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।’
তিনি বলেন, ‘এই দিনটির কথা আমি কখনো ভুলতে পারবো না। যারা আমাকে আজ সম্মান জানিয়েছেন, তাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই। তিনি পদ্মাপাড়ের ঘৌড়দৌড়স্থ লৌহজং উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়ে সকলকে সত্য-সুন্দরের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
হলদিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রাশেদ খান বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সাংসদ নির্বাচনের তিনি প্রার্থী হয়েও প্রচারণা চালাতে পারেনি।ঘাত-প্রতিঘাতে তিনি এলাকায় আসেননি।
রাজনৈতিক বৈরি পরিবেশে তার নেতাকর্মীর যাতে হামলা-মামলার শিকার না হন সে কারণেই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এলাকায় না এলেও নেতাকর্মী ও এলাকাবাসীর জন্য নিরবে কাজ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন জানান, তিনি এলাকায় শুধু বিএনপি নেতা হিসেবেই নয় সাধারণ মানুষের কাছেও জনপ্রিয়। তাই এতদিন পর এলাকায় আসার পরও জনস্রোত বয়ে যায়। ১০ কিলোমিটার দূরের মাওয়া থেকে পথে পথে অভ্যর্থনা জানায় মানুষ। অনেক ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। আর পথে হলদিয়াস্থ বিক্রমপুর প্রেসক্লাব পয়েন্টে পথসভা করেন তিনি। এরপর বিএনপি কার্যালয়ের সভা শেষ করে সন্ধ্যায় বেজগাঁও মাদ্রাসা হলরুমে আরেকটি সভা করেন। পরবর্তীতে তিনি নিজ গ্রাম কলমায় যান। সেখানেও গ্রামবাসীর উষ্ণ সংবর্ধনায় সিক্ত হন তিনি।
এখানে আব্দুর রহমান মাস্টার বলেন, মিজানুর রহমান সিনহা শুধু রাজনীতিকই নন। এই অঞ্চলের মানুষের বাতিঘর। রাজনীতিতে যোগ দেয়ার বহু আগে থেকেই মানব কল্যাণে কাজ করছেন তিনি। শুধু লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ি নির্বাচনী
এলাকাই শুধু নয় সিরাজদিখান, শ্রীনগরসহ পুরো মুন্সীগঞ্জ জেলার মানুষের কাছেই তিনি দলমত নির্বিশেষ গ্রহণযোগ্য মানুষ।
তিনি বহু স্কুল, কলেজ, পাঠাগার এবং ক্লাব উন্নয়নের সাথে জড়িত। ব্যক্তি অনুদানের এই প্রসার মুন্সীগঞ্জ ছাপিয়ে নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য স্থানেও পৌছেছে। তাঁর নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা আসার পরই পাল্টেগেছে এই আসনের হিসাব-নিকাশ। অনেকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রফাইল পিকচারও পাল্টেছে। তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা এর কার। এসব আয়োজনে আরও অংশ নেন জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, মেজর (অব.) মাসুদুর রহমান কাইউম, শ্রীনগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ মমিন আলী, লৌহজং উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অপু চাকলাদার, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ আজাদ চঞ্চল, সদস্য বাবুল ঢালী, কনকসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহ কামাল ঢালী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম দোলন, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. মুরাদ হোসেন প্রমুখ।
সারোয়ার জাহান কামাল বলেন, মিজানুর রহমান সিনহা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ হিসেবেদ যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখেন। তিনি বিএনপি সরকারের সময় সফল স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও সফল বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
সরকারের গুরু দায়িত্ব পালনকালে তাঁর স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা দুলাল হোসেন বলেন, মিজানুর রহমান সিনহা বিক্রমপুরের গর্ব। তাঁর পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত অর্জন দৃষ্টান্তমূলক। তার এই আগমনে বাঁধভাঙ্গা জনস্রোত অনেক কিছুরই ইঙ্গিত করে।
আয়োজনটিতে আরও অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাউদ্দিন, জাতীয়তাবাদী নাগরিক সমাজের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী লিটন।
নাগরিক সমাজের সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, দলমত নির্বিশেষে সৎ, মানবিক ও ভালো মানুষকেই সংসদে পাঠানো দরকার। আর তাদের সচেতনভাবে সমর্থন করা নৈতিক দায়িত্ব। প্রবাসী মিজানুর রহমান বলেন, কোষাধ্যক্ষ থাকার কারণে তৎকালীন সরকার অন্যতম টার্গেটে থাকার পরও দুঃখ-সুখ সব সময় দলের নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে যে নজীর স্থাপন তিনি করেছেন এটি বিরল।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত অনুদানে প্রতিষ্ঠান করার পাশাপাশি তিনি সরকারে থাকা অবস্থায়ও ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। নতুন লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ পরতে পরেত তার উন্নয়নের ছোয়া রয়েছে।