স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঢাকার মগবাজারের ঐতিহ্যবাহী প্রসিদ্ধ বুজুর্গ হযরত শাহানুরী (র:) এর মাজার শরীফকে সংরক্ষণ করার জন্য ঢাকার প্রসিদ্ধ নবাব খাজা আহসান উল্লাহ হযরত শাহ্ নূরী (র:) এর নামে সম্পত্তি ওয়াকফা করেন। যার প্রকৃত ওয়াকিফ হলেন নবাব খাজা আহসান উল্লাহর পক্ষে নবাব খাজা আরজু।
উক্ত এস্টেটের নাম নবাব খাজা আহসান উল্লাহ হযরত শাহানুরী (রঃ) ওয়াকফ এস্টেট যার ইসি নং ৩৩০০ এ।
বর্তমান কথিত মোতাওয়াল্লি আবু তালেব কর্তৃক ওয়াকফর বিপুল সম্পত্তি গ্রাস হয়ে যায়। এলাকার সাধারণ মুসুল্লি নিয়ে কাফিউজ্জামান রাব্বি সম্পত্তি উদ্ধারের ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানালে উক্ত অভিযোগ আমলে নিয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২২/১১/২০২২ ইং তারিখে ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি আত্মসাৎ কারি কথিত মোতাওয়াল্লি আবু তালেবের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওয়াকফ প্রশাসককে নির্দেশনা ক্রমে পত্র প্রেরণ করেন।
ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, রমনা ও হাতিরঝিল থানার সাবেক আওয়ামী লীগ সভাপতি মোখলেসুর রহমান এবং ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুক্তার সরদার ঢাকা মহানগর উত্তর এদের নাম ও ক্ষমতা ব্যবহার করে কথিত মোতাওয়াল্লি শাহ আবু তালেব সকল সম্পত্তি কুক্ষিগত করে রাখেন।
অভিযোগকারী কাফিউজ্জামান রাব্বি ওয়াকফ দপ্তর থেকে কোন সূরা না পেয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিট ফাইল দায়ের করেন।
উক্ত রিটে মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত পত্রের উপর রুল এবং ডিস পোস অফ অ্যাপ্লিকেশন ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি নির্দেশনা দেন। গত বছরের ৩০ জুলাই। ১ বছর ৪ মাস ২১ দিন অতিবাহিত হলেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আবু তালেব এখনো উক্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। অভিযোগকারী কাফিউজ্জামান রাব্বি ওয়াকফ দপ্তর থেকে কোন সুরাহা না পেয়ে চলতি বছরের ২ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন করেন।
চলতি বছরের ১৬ মে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ওয়াকফ দপ্তরে পত্র প্রেরণ করেন। উক্ত পত্রে উল্লেখ করেন যে, নবাব খাজা আহসান উল্লাহ হযরত শাহানুরী (র:) জামে মসজিদ ওয়াকফ এস্টেট, ইসি নং- ৩৩০০ এ এর মোতাওয়াল্লি আবু তালেবের বিরুদ্ধে ২০০ কাঠা ওয়াকফ সম্পত্তি যা আত্মসাৎ ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওয়াকফ অধ্যাদেশ ১৯৬২ এর ৩২ ( ১) ধারামতে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানি কার্যক্রম ৩০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ করে।
এ বিষয়ে পরবর্তী গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্ত্রণালয় নির্দেশনা প্রদান করেন। কথিত মোতাওয়াল্লি আবু তালেব। সরকারের অদৃশ্য দোসরের কারণে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৩০ দিনের নিষ্পত্তির নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আজও অবধি আবু তালেবের বিরুদ্ধে ওয়াকফ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই।
কথিত মোতাওয়াল্লি আবু তালেবের বিরুদ্ধে ৩২ (১) এর ধারার মামলা বন্ধ করার জন্য চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর শাহ নুরি মাজারে ঈদে মিলাদুন্নবী
কে কেন্দ্র করে মিলাদের অনুষ্ঠান রাত ৯ টা পর্যন্ত চলমান থাকে ।
রাত ৯ টার সময় কাফিউজামান রাব্বি ও তার দুই ভাইকে এম শাফিউজ্জামান নাঈম এবং কে এম হাদিউজ্জামানকে নিয়ে গলির মুখে যান। রাস্তার সামনে এসে দাঁড়ালে বিবাদী শাহ তালেবের ছেলে শাহ আবু তাহমিদ ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে বাদি কাফিউজ্জামান রাব্বি ও তার দুই ভাইয়ের উপর অতর্কিত হামলা করে।
উক্ত হামলায় বাদি কাফিউজামান রাব্বির তার নাকের হাড় ভেঙে যায় এবং তার দুই ভাই মারাত্মকভাবে আহত হয়। কাফিউজ্জামান রাব্বির বড় ভাইকে এম শাফিউজ্জামান নাইম হাতিরঝিল থানার ওসির সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে ১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অভিযোগ দিতে বলে।
ওয়াকফ ভবনে বিচারক আদালতে ৩২ ধারা শুনানির দিন ধার্য ছিল দুপুর আড়াইটায়। শুনানি ঠিক আগ মুহূর্তে সন্ত্রাসী দিয়ে ওয়াকফ ভবনে আদালতের বারান্দায় ৩২ ধারার অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন।
পরবর্তীতে ৩ টার দিকে শুনানি শুরু হলে হাতিরঝিল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বিচারিক আদালতে প্রবেশ করে তেজগাঁও ডিসি স্যার এর কথা বলার কথা বলে বাদি কাফিউজ্জামান রাব্বি ও তার দুই ভাইকে এম শাফিউজ্জামান নাঈম ও কে এম হাদিউজ্জামানকে জেল হাজতে আটক রাখে।
শাহ আবু তালেবের বিরুদ্ধে ৩২ ধারার চলমান মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদি কাফিউজ্জামান রাব্বি ও তার দুই ভাইকে চাপ দিতে থাকে। মামলা তুলে নেওয়ার কথা রাজি না হলে হাতিরঝিল থানায় মামালা দায়ের করেন কথিত মোতাওয়াল্লি আবু তালেবের ছেলে শাহ আবু তাহমিদ ও থানার ওসি সাইফুল ইসলামের যোগসাযোসে।
মামলা নং- ১১, তারিখ ১৮/০৯/২০২৪ ইং ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩০৭/৩৭৯/৪২৭/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড। উত্ত মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মোঃ শফিউল আলম। যার বিপি নং- ৮৫১৩১৪৮৬২১।
উল্লেখ যে, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ঘটনাস্থল পোনে চারটার দিকে এলাকার শাহ নুরী মাজার এর সামনে। উল্লেখ্য উক্ত মিথ্যা মামলায় ওসি হাতিরঝিল কাফিউজ্জামান রাব্বি ও তার দুই ভাইকে ওয়াকফ এর বিচারক আদালত থেকে ধরে নিয়ে আসে।
১৯ সেপ্টেম্বর উক্ত মিথ্যা মামলা জামিন পান কাফিউজ্জামান রাব্বি ও তার দুই ভাই। চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর হাতিরঝিল থানা ওসির বিরুদ্ধে ডিএমপি কমিশনার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন কাফিউজ্জামান রাব্বি। উক্ত অভিযোগ আমলে নিয়ে স্মারক নং১৫৭১৮ অনুসন্ধান শুরু করেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ১)।
বর্তমানে বাদি কাফিউজ্জামান রাব্বি ও তার দুই ভাইকে এম শাফি উজ্জামান নাঈম এবং কে এম হাদিউজ্জামান তার সাথে ৩২ ধারার চলমান মামলার বাদির সাক্ষীদয় কথিত মোতাওয়াল্লি শাহ আবু তালেব কর্তৃক প্রাণনাশের ঝুঁকিতে আছে। বর্তমানে সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে অভিযোগকারী এবং তার দুই ভাইয়ের বসত বাড়িতে বসবাস করতে পারছে না।